,

বিয়ের আসর থেকে পালালেন বর!

বরগুনা: বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের রায় বাড়িতে চলছে বিয়ের আয়োজন। নানা সাজে সেজে অগ্নিসাক্ষী রেখে সাতপাকে বাঁধা পড়ার অপেক্ষায় বর-কনে।

বাহারি সাজে সজ্জিত পুরো বাড়ি। লাল নীল বাতি জ্বলছে বাড়ি জুড়ে। সম্পন্ন হয়েছে বিয়ের সব আয়োজন। বাকি শুধুই সাতপাকে অগ্নি প্রদক্ষিণ করা।

এরই মধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালিয়ে যান বর। এরপর বিয়ে বাড়ি থেকে একে একে সটকে পড়তে শুরু করেন অন্য অতিথিরাও।

শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে একেবারে শেষ মুহূর্তে এভাবেই একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছে বরগুনার বেতাগী উপজেলা প্রশাসন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী গ্রামের সুনীল রায়ে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয় বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে। বর উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের পাত্র। হিন্দুধর্মের শাস্ত্রমতে বিয়ের লগ্ন ছিল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায়।

যথাসময়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হয় বর পক্ষ। পুরোহিতের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন বরও। এরই মধ্যে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয় বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন। তার উপস্থিতি টের পেয়েই ছোটাছুটি শুরু করেন বর ও কনের স্বজনরা। সবার চোখ এড়িয়ে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যান বরও।

পরে বিয়ে বন্ধ করে কনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে উপজেলা প্রশাসন। বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে কনের স্বজনদের অবহিত করেন তারা। এরপর ভুল বুঝতে পারেন কনের স্বজনরা।

এ বিষয়ে কনের বাবা সুনিল রায় বলেন, বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। আমি এখন বুঝতে পেরেছি। তাই এই মুহূর্তে আমার মেয়ের আর বিয়ে দেবো না। ও এখন পড়ালেখা করবে। তারপর প্রাপ্ত বয়স হলে ওর বিয়ে দেব।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন সদা তৎপর। অপ্রাপ্ত বয়সে কোথাও কোনো বিয়ের সংবাদ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি আমরা। আমাদের এ তৎপরতা সবসময় অব্যাহত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর